অস্ট্রিয়া প্রবাসী আলোচিত সেফুদার সঙ্গে আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্যপদ থেকে সম্প্রতি অব্যাহতি পাওয়া হেলেনা জাহাঙ্গীরের যোগাযোগ ছিল বলে জানিয়েছে র্যাব।
আজ শুক্রবার (৩০ জুলাই) বিকেলে রাজধানীতে কুর্মিটোলায় র্যাব সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, হেলেনা জাহাঙ্গীরকে নাতি হিসেবে সম্বোধন করতেন সেফুদা। শুধু তাই নয় সেফুদার সঙ্গে লেনদেনও ছিল হেলেনা জাহাঙ্গীরের।
খন্দকার আল মঈন বলেন, সেফুদা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যের মাধ্যমে দেশবাসীর নজর কাড়তে চেষ্টা করেন। তার সঙ্গে গ্রেফতারকৃতের নিয়মিত যোগাযোগ ও লেনদেন রয়েছে বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়।
তিনি বলেন, “হেলেনা জাহাঙ্গীর অপকৌশলের মাধ্যমে নিজেকে ‘মাদার তেরেসা’, ‘পল্লীমাতা’, ‘প্রবাসীমাতা’ হিসেবে পরিচিতি পেতে জয়যাত্রা ফাউন্ডেশনকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেন। তার পৃষ্ঠপোষকতায় একটি সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া খেতাবের অপপ্রচার চালাত। ”
এর আগে, গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকার গুলশানে হেলেনা জাহাঙ্গীরের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে র্যাব। পরে মিরপুরে হেলেনার মালিকানাধীন জয়যাত্রা আইপিটিভির কার্যালয় এবং জয়যাত্রা ফাউন্ডেশন ভবনেও অভিযান চালায় র্যাব।
রাতের অভিযান শেষে হেলেনাকে আটকের কারণ জানতে চাইলে র্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয় বেশকিছু অভিযোগের ভিত্তিতে হেলেনা জাহাঙ্গীরের বাসায় অভিযান চালানো হয়। প্রায় চার ঘন্টার দীর্ঘ অভিযানে তার বাসা থেকে বিদেশি মদ, হরিণের চামড়া, ক্যাসিনো খেলার সরঞ্জাম, বিদেশি মুদ্রা, ওয়াকিটকিসহ বেশ কিছু অবৈধ সরঞ্জাম উদ্ধারের কথা জানায় র্যাব।
বেশ কিছুদিন ধরেই নানা কারণে আলোচনা ও সমালোচনার জন্ম দিয়েছেন হেলেনা জাহাঙ্গীর। সম্প্রতি আওয়ামী চাকরিজীবী লীগ নামে একটি ভুঁইফোড় সংগঠনের সভাপতি হিসেবে নাম আসায় নতুন করে তাকে নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে সে পোস্টারে দেখা যায় জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে নেতা বানানো ও পোস্ট দেয়ার ঘোষণা। এরপরই অব্যাহতি দেয়া হয় আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক উপকমিটির পদ থেকে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচিত হন হেলেনা জাহাঙ্গীর।
এরপরই ক্ষোভ প্রকাশ করেন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। প্রশ্ন ওঠে তার রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা নিয়ে। কীভাবে তিনি আওয়ামী লীগে পোস্ট পেলেন তা নিয়েও সমালোচনা শুরু হয়।
শুরুতে ব্যবসায়ী ও শিল্পোদ্যোক্তা হলেও শেষে নাম লেখান রাজনীতিতে। অল্পদিনে তাতেও সফল হন। স্থান পান আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক উপকমিটিতে। তার আগে গত বছরের ডিসেম্বরে কুমিল্লা জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হন। এমনকি কুমিল্লার এমপি আবদুল মতিন খসরুর মৃত্যুতে ফাঁকা হওয়া আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন হেলেনা জাহাঙ্গীর।
কুশিয়ারাভিউ২৪ডটকম/৩০ জুলাই,২০২১/মিলাদ